আসছালামু আলাইকুম প্রিয় দ্বীনি ভাই ও বোনেরা সবাই কেমন আছেন। আসা করি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ দয়ায় ভালো আছেন। বন্ধুরা আমাদের সমাজে অনেক ছেলে মেয়ে আছে যাদের বিয়ে হচ্ছে না, বিয়ের প্রস্তাব আসলে ভেঙ্গে যায়। নানান রকম সমস্যা দেখা দেয়। তাই অনেকে দ্রুত বিয়ে হওয়ার জন্য অনেক আমল খুজে থাকেন। তাই আজকে আমরা ইসলামি শরীয়ত অনুযায়ী কোন আমল গুলো করলে দ্রুত বিয়ে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আমরা সেই আমল গুলি তোমাদের মাঝে তুলে ধরার চেষ্টা করতেছি। ইনশাআল্লাহ তোমাদের উপকারে আসবে।
দ্রুত বিয়ে ও উত্তম জীবনসঙ্গী পাওয়ার আমল
অনেক মানুষই জানতে চায় কিংবা দুঃশ্চিন্তায় থাকে যে, কিভাবে উত্তম স্বামী কিংবা স্ত্রী পাওয়া যায়। আবার বিবাহিত স্বামী-স্ত্রীও জানতে চায় কিভাবে উত্তম সন্তান লাভ করা যায়। তাদের জন্যই এ কুরআনি আমল-
رَبَّنَا هَبْ لَنَا مِنْ أَزْوَاجِنَا وَذُرِّيَّاتِنَا قُرَّةَ أَعْيُنٍ وَاجْعَلْنَا لِلْمُتَّقِينَ إِمَامًا
উচ্চারণ : ‘রাব্বানা হাব্লানা মিন আযওয়াঝিনা ওয়া জুর্রিয়াতিনা কুর্রাতা আইয়ুনিও ওয়াঝআলনা লিলমুত্তাক্বিনা ইমামা।’
অর্থ : ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আপনি আমাদের এমন স্ত্রী ও সন্তান দান করুন। যারা আমাদের চোখ জুড়িয়ে দেয় আর আমাদেরকে (পুরুষদেরকে) মুত্তাকি লোকদের নেতা বানিয়ে দাও।’ (সুরা ফুরক্বান : আয়াত ৭৪)
যারা মহান আল্লাহর কাছে উত্তম জীবনসঙ্গী লাভের প্রত্যাশা করে, তাদের উচিত মহান আল্লাহর কাছে তারই শেখানো ভাষায় আবেদন করা। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনুল কারিমে বান্দাকে উত্তম স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান লাভের দোয়া শিখিয়েছেন। যেসব স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান একে অন্যের চোখকে শীতল করবে।
ছেলে/মেয়েদের দ্রুত বিয়ে হওয়ার আমল
আমাদের জীবনে সেটাই ঘটবে যা আল্লাহ তাআলা আমাদের ভাগ্যে নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তাই পেরেশান হওয়ার কিছু নেই। আল্লাহর ফয়সালার উপর সন্তুষ্ট থাকা চাই। মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন,
.
قُلْ لَنْ يُصِيْبَنَا إِلاَّ مَا كَتَبَ اللهُ لَنَا هُوَ مَوْلَانَا
.
"তুমি বল, আল্লাহ আমাদের ভাগ্যে যা লিখে রেখেছেন, তা ব্যতীত কিছুই আমাদের নিকট পৌঁছবে না। তিনিই আমাদের অভিভাবক।" [সুরাহ আত-তওবাহ, আয়ত : ৫১]
.
তবে বেশি বেশি করে দুআ করবেন। কারণ দুআ অনেক পাওয়ারফুল আমল। আল্লাহ তাআলা আম্বিয়ায়ে কেরামের আমলের মধ্যে দুআর বিষয়টি পবিত্র কুরআনে বারবার উল্লেখ করেছেন। হাদিসে এসেছে,
.
لاَ يَرُدُّ الْقَضَاءَ إِلاَّ الدُّعَاءُ
"ভাগ্য পরিবর্তন হয় না দুআ ব্যতীত।" [তিরমিযী, ২১৩৯]
.
অতিদ্রুত হালাল, উত্তম ও সম্মানজনক রুজি এবং উত্তম ও দ্বীনদার স্ত্রী কিংবা স্বামী পাওয়ার জন্য বেশি বেশি করে মুসা আলাইহিস সালাম কৃত দুআটি পড়তে পারেন:
.
رَبِّ اِنِّیۡ لِمَاۤ اَنۡزَلۡتَ اِلَیَّ مِنۡ خَیۡرٍ فَقِیۡرٌ
.
"হে আমার পালনকর্তা, তুমি আমার প্রতি যে অনুগ্রহ নাযিল করবে, আমি তার মুখাপেক্ষী।" [সুরাহ কাসাস, আয়াত : ২৪]
.
উত্তম জীবনসঙ্গী, নেককার সন্তান-সন্ততির জন্য আল্লাহ তাআলার শিখিয়ে দেয়া কুরআনি এই দুআটি গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপক অর্থপূর্ণ,
.
رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ اَزۡوَاجِنَا وَذُرِّیّٰتِنَا قُرَّۃَ اَعۡیُنٍ وَّاجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِیۡنَ اِمَامًا.
.
"হে আমাদের পালনকর্তা, আমাদের স্ত্রীদের পক্ষ থেকে এবং আমাদের সন্তানের পক্ষ থেকে আমাদের জন্যে চোখের শীতলতা দান কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্যে আদর্শস্বরূপ কর।" [সুরাহ ফুরকান, আয়াত : ৭৪]
.
বেশি বেশি তাওবা ও ইস্তিগফার করুন। কারণ এটা রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম একটি আমল। আর, আপনার জীবনের প্রতিটি নিয়ামত ও প্রশান্তি আপনার রিজিকেরই অন্তর্ভুক্ত। নফল সাদাকা করুন। বেশি করে সালাতুল হাজত পড়ে আল্লাহর নিকট সাহায্য চান। কারণ এটা দ্রুত বিয়ে ও দ্বীনদার স্বামী/স্ত্রী পাওয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ আমল।
.
আর হতাশ হওয়ার কোনো কারণ নেই। আল্লাহ তাআলা আপনাকে অবশ্যই সাহায্য করবেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
.
ﺛَﻠَﺎﺛَﺔٌ ﺣَﻖٌّ ﻋَﻠَﻰ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻋَﻮْﻧُﻬُﻢْ: ﺍﻟﻤُﺠَﺎﻫِﺪُ ﻓِﻲ ﺳَﺒِﻴﻞِ ﺍﻟﻠَّﻪِ ﻭَﺍﻟﻤُﻜَﺎﺗَﺐُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻷَﺩَﺍﺀَ، ﻭَﺍﻟﻨَّﺎﻛِﺢُ ﺍﻟَّﺬِﻱ ﻳُﺮِﻳﺪُ ﺍﻟﻌَﻔَﺎﻑَ
.
"তিন ব্যক্তিকে সাহায্য করা আল্লাহ্ তাআলার জন্য কর্তব্য হয়ে যায়। আল্লাহ তাআলার রাস্তায় জিহাদকারী, চুক্তিবদ্ধ গোলাম যে তার মনিবকে চুক্তি অনুযায়ী সম্পদ আদায় করে মুক্ত হতে চায় এবং ওই বিবাহে ইচ্ছুক ব্যক্তি যে (বিবাহ করার মাধ্যমে) পবিত্র থাকতে চায়।" [তিরমিযী: ১৬৫৫, নাসায়ী: ৩২১৮]
.
ধৈর্যধারণ করে এই আমলগুলো করতে থাকুন। আল্লাহ তাআলার প্রতি দৃঢ় আস্থা ও বিশ্বাস রাখুন। শীঘ্রই ব্যবস্থা হয়ে যাবে ইন শা আল্লাহ!
৪০,তিন,৭ দিনের মধ্যে বিয়ে হওয়ার আমল,দোয়া
২ . নিয়মিত সুরা কসাসের ২৪ নং আয়াত ও সুরা দুহা পড়ুন : নিয়মিত সুরা কসাসের ২৪ নং আয়াত পড়ুন। কেননা মুসা (আ.) যখন একাকিত্ববোধ করেছেন তখন এই দোআ পড়েছেন। এবং আল্লাহপাক তার একাকিত্ব দূর করে দিয়েছেন। অনেক ইসলামিক স্কলার বলেছেন, কোনো ছেলে যদি দিনে ১০০ বার সুরা কসাসের ২৪ নং আয়াত পাড়ে তাহলে খুব অল্প সময়ের মধ্যে সে তার পছন্দের পাত্রী পেয়ে যাবে। আর কোনো মেয়ে যদি ফজরের পরে ১১বার সুরা দুহা পড়ে তাহলে সেও অল্প দিনের মধ্যে পছন্দের পাত্র পেয়ে যাবে।
৩. আল্লাহপাকে বেশি বেশি স্মরণ করুন : ১১ বার দুরূদ শরীফ এর পরে ৩১৩ বার আল্লাহর নাম এর পরে আবার ১১বার দুরূদ শরীফ এভাবে ৪১দিন প্রত্যেক নামাজের পরে যদি কেউ পড়ে তাহলে অবশ্যই সে তার বিবাহের জন্য একটি সুন্দর প্রস্তাব পাবে।
৪. সুরা তাওবার ১২৯ নং আয়াত নিয়মিত পড়ুন : বিষয়টি হচ্ছে প্রত্যেক দিন পাঁজ ওয়াক্ত নামাজের পরে ১৯ বার বিসমিল্লাহ, ১১০০ বার সুরা তাওবার ১২৯ নং আয়াত, ১০০ বার দুরূদ শরীফ ও শেষে আবার ১৯ বার বিসমিল্লাহ। কেউ যদি নিজের অথবা নিজের ছেলে-মেয়ের জন্য এভাবে নিয়মিত পড়ে তাহেল অবশ্যই এর কার্যকারিতা দেখতে পাবে।
৫. সুরা মারইয়াম পড়ুন : দিনের যে কোনো এক নামাজের পরে একবার সুরা মারইয়াম পড়ুন। এই আমলটি যে কোনো মেয়েও করতে পারে আবার মেয়ের মাও করতে পারেন।
৬. নিয়মিত তাসবিহে ফাতেমি পড়ুন : দিনের যে কোনো সময় দুই রাকাত নামাজ পড়ুন এরপরে ১১বার দুরূদ শরীফ পড়ুন এর পরে তাসবিহে ফাতেমি পাঠ করুন।
তাসবিহে ফাতেমি : ৩৪ বার আল্লাহুক আকবার। ৩৩ বার আল হামদু লিল্লাহ। আর ৩৩ বার সুবহানাল্লাহ পড়ুন। আশা করা যায় বিবাহ সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যার অতিদ্রুত সমাধান হয়ে যাবে।
৭. নিয়মিত সুরা মুয্যাম্মিল পড়ুন : কোনো মেয়ের যদি দিন দিন বয়স বাড়তে থাকে এবং বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজে না পায় তাহেল মা-বাবার মধ্যে যে কোনো একজন জুমার নামাজের পরে দুই রাকাত নামাজ আদায় করবেন এবং ২১ বার এই সুরা পাঠ করবেন আশা করা যায় বিবাহ সংক্রান্ত যে কোনো সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
টাগঃদ্রুত বিয়ে ও উত্তম জীবনসঙ্গী পাওয়ার আমল, ছেলে/মেয়েদের দ্রুত বিয়ে হওয়ার আমল, ৪০,তিন,৭ দিনের মধ্যে বিয়ে হওয়ার আমল,দোয়া
Any business enquiry contact us
Email:-Educationblog24.com@gmail.com
(সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)