রচনা বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু (বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু রচনা) |আমাদের বঙ্গবন্ধু |রচনা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ -জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু রচনা


Any business enquiry contact us

Email:- Educationblog24.com@gmail.com


 

রচনা বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু (বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু রচনা) |আমাদের বঙ্গবন্ধু |রচনা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ -জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু রচনা

রচনা বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু 

  • ভূমিকা 
  • জন্ম 
  • বংশপরিচয় 
  • শৈশবকাল 
  • দুরন্তপনা 
  • খেলাধুলায় পারদর্শিতা 
  • সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ 
  • অসাম্প্রদায়িক মনোভাব 
  • বন্ধুত্বপরায়ণতা 
  • ব্যক্তিজীবনে বঙ্গবন্ধু 
  • মানবিক মূল্যবোঁধের পরিস্ফুটন 
  • কর্তব্যবোধ 
  • ব্যক্তিত্বের বিকাশ 
  • শিক্ষাজীবন 
  • গোপালগঞ্জ মিশন 
  • হাইস্কুলে ভর্তি 
  • ছাত্ররাজনীতিতে প্রবেশ 
  • গোপালগঞ্জ মুসলিম লীগ 
  • নেতৃত্বগুণ
  •  ইসলামিয়া কলেজে প্রবেশ 
  • পিতার আদর্শ অনুসরণ 
  • অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ 
  • প্রখর আত্মবিশ্বাস 
  • রাজনৈতিক কার্যে গণতান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন 
  • শিক্ষকদের কাছে আদর্শ ছাত্র 
  • অসাম্প্রদায়িক চেতনা 
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি
  •  আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন 
  • বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সংগ্রাম  
  • ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন
  •  ১৯৫৪ সালের নির্বাচন 
  • ১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন 
  • ১৯৬৯ সালের গণ - অভ্যুত্থান 
  • বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ 
  • ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন
  •  বঙ্গবন্ধু ও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ 
  • ৭ ই মার্চের ভাষণ 
  • ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা 
  • মুজিবনগর সরকার গঠন 
  • বিজয় অর্জন 
  • স্বদেশে প্রত্যাবর্তন 
  • রাষ্ট্র পুনর্গঠনের উদ্যোগ 
  • সংবিধান প্রণয়নমু
  • মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা
  •  অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ ও স্ব - নির্ভর রাষ্ট্র গঠন
  •  বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ 
  • প্রযুক্তিনির্ভর রাষ্ট্র গঠন 
  • আইটিইউ এর সদস্যপদ লাভ 
  • অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠন 
  • গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন 
  • রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধু 
  • বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু
  •  বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বাধীন বাংলাদেশ 
  • মৃত্যু 
  • উপসংহার 
ভূমিকা : হাজার বছরের ইতিহাসে বাঙালির শ্রেষ্ঠতম অর্জন বাংলাদেশের স্বাধীনতা । এ স্বাধীনতা ইতিহাসের সঙ্গে যার নাম জড়িয়ে আছে , তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি , বাংলাদেশের জাতির পিতা । তিনি শুধু বাংলাদেশের নন , বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নেতাদের অন্যতম । দীর্ঘ সাধনার মধ্য দিয়ে তিনি অসীম মর্যাদা লাভ করেন । 
কবির ভাষায় 
“ যতদিন রবে পদ্মা - মেঘনা , যমুনা গৌরী বহমান ততদিন রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান । ” 

জন্ম : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯২০ সালের ১৭ মার্চ গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া গ্রামে ' শেখ ' পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন । তার পিতার নাম শেখ লুৎফর রহমান । মায়ের নাম সায়েরা খাতুন ।

বংশপরিচয় : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পিতা ছিলেন শেখ লুৎফর রহমান । শেখ বংশের গোড়াপত্তন করেছিলেন শেখ আউয়াল নামের এক ধার্মিক পুরুষ । তিনিই এ বংশের জন্ম দেন । 

শৈশবকালঃবঙ্গবন্ধুর শৈশবকাল ছিল অত্যন্ত মধুর ৷ ছোটবেলায় বাবা - মা তার নাম রেখেছিলেন খোকা । আর এলাকার অন্যরা তাকে ডাকত ' মিঞাভাই ' । তিনি ছোটবেলায় পাখি ভালো টবেলায় পাখি ভালোবাসতেন । পাশাপাশি দুরন্তপনাও ছিল তার মধ্যে । নিম্নে বঙ্গবন্ধুর শৈশবকালের কিছু চিত্র তুলে ধরা হলো। 

দুরন্তপনা : বঙ্গবন্ধুর শৈশবকাল কেটেছিল ভীষণ দুরন্তপনায় । এক গাছ থেকে আরেক গাছে ঝাঁপ দেওয়া , পুকুরে সাঁতার কাটা এগুলো ছিল বঙ্গবন্ধুর নিত্যদিনের কাজ । 
খেলাধুলায় পারদর্শিতা : বঙ্গবন্ধু ছিলেন ফুটবল খেলায় অত্যন্ত পারদর্শী । তিনি তার দলবল নিয়ে পিতার সাথে খেলতে যেতেন । স্কুলের ফুটবল দলে তার স্থান ছিল পাকাপোক্ত । বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন , “ পুরো বছরই আমি ও আমার দল আব্বার অফিসার্স ক্লাবের সাথে খেলতাম । ” ( অসমাপ্ত আত্মজীবনী , পৃষ্ঠা -৩৭ )

 সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণ করতেন । তিনি এ বিষয়ে বলেছিলেন , “ আমি খুব ভালো ব্রতচারী করতাম । ”

 অসাম্প্রদায়িক মনোভাব : অসাম্প্রদায়িকতা ছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি অন্যতম গুণ । তিনি কখনো জাত - ধর্ম ভেদে পার্থক্য সৃষ্টি করতেন না । তিনি সকলকে সমান দৃষ্টিতে দেখতেন । এজন্যই তিনি বাঙালির প্রিয় নেতা হতে পেরেছিলেন । 

বন্ধুত্বপরায়ণতা : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অত্যন্ত বন্ধুত্বপরায়ণ । তিনি নিজের সহপাঠী আব্দুল মালেককে বাঁচাতে গিয়ে প্রথম কারাবরণ করেন । এছাড়া তিনি সকল বিপদ - আপদে তার বন্ধুদের পাশে থাকতেন । 
মানবিক মূল্যবোধের পরিস্ফুটনঃ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছোটবেলা থেকেই অসাধারণ মানবিক গুণাবলির অধিকারী ছিলেন । এসকল গুণাবলিই বঙ্গবন্ধুকে ব্যক্তিত্বের উঁচু স্থানে নিয়ে গিয়েছিল । নিম্নে এগুলোর বিবরণ তুলে ধরা হলো 

কর্তব্যবোধ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন অত্যন্ত কর্তব্যপরায়ণ । তিনি সকল কাজ অত্যন্ত দায়িত্ব ও নিষ্ঠার সাথে পালন করতেন । তিনি ছিলেন অত্যন্ত দায়িত্ববান । কর্তব্যবোধ তার মধ্যে সর্বদা জাগ্রত ছিল । 

ব্যক্তিত্বের বিকাশ : ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন মানবিক গুণাবলি ও দায়িত্ববোধের মাধ্যমে নিজের ভেতর একটি অসাধারণ ব্যক্তিত্ব সৃষ্টি করেছিলেন । এই অসাধারণ ব্যক্তিত্বের গুণেই তিনি ' খোকা ' থেকে ' বঙ্গবন্ধু '
হয়ে ওঠেন । 

শিক্ষাজীবন : ১৯২৭ সালে সাত বছর বয়সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হন । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাসস্থান থেকে গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দূরত্ব বেশি ছিল না । এভাবেই শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর শিক্ষা জীবন । 

গোপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুলে ভর্তি : ১৯৩৭ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুলে ভর্তি হন । অতঃপর ১৯৪২ সালে তিনি গোপালগঞ্জ মিশন হাইস্কুলে ম্যাট্রিক পাশ করেন । এরপর কলেজে ভর্তি হওয়ার জন্য প্রস্তুত হন ।

 ছাত্ররাজনীতিতে প্রবেশ : হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী সাহেবের সাথে আলোচনা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গোপালগঞ্জ মুসলিম ছাত্রলীগ গঠন করেন । এতে সভাপতি করা হয় খন্দকার শামসুদ্দিন সাহেবকে এবং বঙ্গবন্ধুকে সম্পাদকা। 

 গোপালগঞ্জ মুসলিম লীগ : গোপালগঞ্জে মুসলিম লীগ ও মুসলিম লীগ ডিফেন্স কমিটি গঠন করা হয় । বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সেক্রেটারি নির্বাচিত হন এবং নিজের দায়িত্ব পালন করতে থাকেন । 

পরোপকারিতা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বদা অন্যের উপকার করতে উদ্যোগী ছিলেন । তিনি সর্বদা চিন্তা করতেন , কীভাবে দেশের মানুষের উপকার করা যায় । কীভাবে তাদের সাহায্য করা যায় । তিনি সারাজীবন দেশের মানুষের স্বার্থে কাজ করে গেছেন । 

 নেতৃত্বগুণ : নেতৃত্ব গুণটি ছোটবেলা থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে ছিল । তিনি ছিলেন যেমন বাঙালির নেতা , তেমনি ছিলেন স্কুলের ফুটবল দলের নেতা । 

ইসলামিয়া কলেজে প্রবেশ : ১৯৪২ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামিয়া কলেজে ভর্তি হন । ইসলামিয়া কলেজ ছিল তখন ছাত্র আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র । ১৯৪৭ সালে তিনি এখান থেকে স্নাতক পাশ করেন । 
পিতার আদর্শ অনুসরণ : বঙ্গবন্ধু সবসময় সকল ক্ষেত্রে পিতার আদর্শকে অনুসরণ করতেন । কখনো ভয়ে পিছপা হতেন না । বুকে সৎ সাহস রাখতেন । এ সম্পর্কে তিনি বলেন , “ আর যারা মা - বাবার আশীর্বাদ পায় , তাদের মতো সৌভাগ্যবান কয়জন ? " 
 ,
 অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদঃ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সর্বদা অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন । এর পরিচয় পাওয়া যায় তার এক উক্তির মাধ্যমেঃ “ হতেই পারে না । সে দলের মধ্যে কোঠারি করে । তাঁকে পদ দেওয়া যাবে না ।

 প্রখর আত্মবিশ্বাস : বঙ্গবন্ধু ছিলেন অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী । তিনি সবসময় নিজের আত্মমর্যাদার উপর আস্থা রাখতেন । সবসময় আত্মবিশ্বাস বজায় রাখতেন । 
রাজনৈতিক কার্যে গণতান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে গণতান্ত্রিক পন্থা অবলম্বন করতেন । যেমন- ইসলামিয়া কলেজে থাকাকালে ছাত্ররাজনীতির বিভিন্ন পদে নির্বাচন দিয়ে প্রার্থী বাছাই করতেন ।  

শিক্ষকদের কাছে আদর্শ ছাত্র : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন শিক্ষকদের নিকট অত্যন্ত স্নেহের পাত্র । তিনি ছিলেন শিক্ষকদের নয়নের মণি । তিনি বলেছেন , “ আমি কখনো অন্যায় আবদার করতাম না । এজন্য শিক্ষকরা আমাকে ভালোবাসতেন । ” 

অসাম্প্রদায়িক চেতনা : সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা যে কত ভয়াবহ হতে পারে , তার পরশ পাওয়া যায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অভিজ্ঞতায় ৷ এজন্য তিনি আজীবন সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা রুখতে ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পরিসর বাড়াতে কাজ করে গেছেন ।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগে ভর্তি হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । এর মাধ্যমে তিনি পূর্ণ রাজনৈতিক জীবনে প্রবেশ করেন । 

আওয়ামী মুসলিম লীগ গঠন : ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর নেতৃত্বে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাধারণ সম্পাদক পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার মাধ্যমে জন্ম নেয় আওয়ামী মুসলিম লীগ । 

বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার সংগ্রাম : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তান সৃষ্টির পর বাংলাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদায় অধিষ্ঠিত করার লক্ষ্যে কাজ শুরু করেন । এজন্য তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন । 

১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন : বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে এদেশের তরুণ ছাত্র সমাজ রাজপথে নেমে আন্দোলন শুরু করে । এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ তাদের বুকের উপর গুলি চালায় । এতে রফিক , শফিক , সালাম , বরকতসহ আরো অনেকে শহীদ হন ।

১৯৫৪ সালের নির্বাচন : ১৯৫৪ সালের প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট বিপুল ভোটে জয়ী হয় । এর মাধ্যমে বাঙালি জাতি যে বঙ্গবন্ধুকে সমর্থন করে , তা প্রমাণিত হয় । 

১৯৬৬ সালের ছয় দফা আন্দোলন : ১৯৬৬ সালে ৫-৬ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির মুক্তির সনদ ছয় দফা দাবি উপস্থাপন করেন । এটি ছিল বাঙালির মুক্তিমনদ । এর মধ্যেই বাঙালি জাতির মুক্তির সকল প্রেরণা নিহিত ছিল । 

১৯৬৯ সালের গণ - অভ্যুত্থান : ১৯৬৮ সালে বঙ্গবন্ধুসহ আরো ৩৫ জনের বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা করা হয় । এর প্রতিবাদে জনগণ বিক্ষোভে ফেটে পড়ে । পরবর্তীতে জনগণের চাপের মুখে সরকার তাদের মুক্তি দিতে বাধ্য হয় ।

বঙ্গবন্ধু উপাধি লাভ : ১৯৬৯ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ শেখ মুজিবুর রহমানের সম্মানে এক বিশাল জনসভার আয়োজন করে এবং তৎকালীন ছাত্রনেতা তোফায়েল আহমেদ শেখ মুজিবকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করেন । 

১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচন : ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে বিজয় অর্জন করে । এর মাধ্যমেই প্রমাণিত হয় মানুষ আওয়ামী লীগের উপর আস্থা রাখে । 
বঙ্গবন্ধু ও ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে । বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে তার প্রচেষ্টা অপরিসীম । বঙ্গবন্ধু , বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ যেন পরস্পর সমার্থক শব্দ ৷ 

৭ই মার্চের ভাষণ : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ ই মার্চ রেসকোর্স ময়দানে প্রায় দশ লক্ষ লোকের সামনে ভাষণ প্রদান করেন । তিনি বলেন , “ এবারের সংগ্রাম , আমাদের মুক্তির সংগ্রাম , এবারের সংগ্রাম , স্বাধীনতার সংগ্রাম । ”

 ২৬ মার্চের স্বাধীনতা ঘোষণা : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । এর মাধ্যমে  পুরো বাঙালি জাতি মুক্তিযুদ্ধে যাওয়ার প্রেরণা পায় । ঘোষণায় বঙ্গবন্ধু  বলেন- “ This may be my last message . From Today Bangladesh is independent . "


মুজিবনগর সরকার গঠন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি করে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল গঠন করা হয় মুজিবনগর অস্থায়ী সরকার । 

বিজয় অর্জন : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালিরা দীর্ঘ নয় মাস সংগ্রাম করার পর অবশেষে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে ।

  স্বদেশে প্রত্যাবর্তন : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তান কারাগার থেকে মুক্তিলাভ করেন । অতঃপর ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন । তার স্মরণে প্রতিবছর এই দিনটি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস ' হিসেবে পালন করা হয়।

রাষ্ট্র পুনর্গঠনের উদ্যোগ : স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের পর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রাষ্ট্র পুনর্গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করেন । তিনি একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে পুনর্গঠন করে আবার আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সংগ্রাম শুরু করেন । 

সংবিধান প্রণয়ন : ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের শাসনভার গ্রহণ করার এক বছরের মধ্যেই বঙ্গবন্ধু জাতিকে উপহার দেন , যা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।

 মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা : স্বাধীন বাংলাদেশ রাষ্ট্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা করতে সর্বদা তৎপর ও সক্রিয় ছিলেন । তিনি সবসময় একটি সুন্দর রাষ্ট্রের স্বপ্ন দেখতেন ।

অর্থনীতি শক্তিশালীকরণ ও স্ব - নির্ভর রাষ্ট্র গঠন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেন ৷ তিনি অনেক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করেন , যা খুব প্রশংসনীয় ছিল । এগুলো পরবর্তীতে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । 
বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন । নিম্নে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বঙ্গবন্ধুর কিছু উদ্যোগ নিম্নে দেওয়া হলো 

প্রযুক্তিনির্ভর রাষ্ট্র গঠন : বঙ্গবন্ধু চেষ্টা করেছিলেন একটি প্রযুক্তিনির্ভর রাষ্ট্র গঠনের । সে লক্ষ্যে তিনি বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে উদ্যোগগুলো বাস্তবায়নের অনুরোধ করেন।

আইটিইউ এর সদস্যপদ লাভ : ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক টেলিকমিউনিকেশন ইউনিয়নের ( আইটিইউ ) সদস্যপদ লাভ করে । আইটিইউ স্যাটেলাইট বা অরবিট ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিধিমালা তৈরি এবং এর বরাদ্দ তৈরি করতে সহযোগিতা দেয়া ও সমন্বয়ের কাজ করে থাকে । 

অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র গঠন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলার চেষ্টা করেছিলেন । তিনি স্বপ্ন দেখেছিলেন , একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্রের যেখানে সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে শান্তিতে বসবাস করবে , কোনো বিভেদ থাকবে না । 

গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন । যেখানে সকল মানুষের মতামতের মূল্য ও গুরুত্ব থাকবে ৷ 

রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে বঙ্গবন্ধুঃ ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল হিসেবে পরিচিত । এসময় তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তার শাসনকার্য পরিচালনা করেন । স্বাধীন বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদান ছিল অপরিসীম ।

বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু : বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন বিশ্বসেরা নেতাদের অন্যতম । ১৯৭৪ সালে তিনি জাতিসংঘে সর্বপ্রথম বাংলা ভাষায় ভাষণ প্রদান করেন ।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বাধীন বাংলাদেশ : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন একজন আদর্শ রাষ্ট্রনায়ক ও নেতা । তিনি আমাদের মাঝে যে আদর্শের সন্ধান দিয়ে গেছেন , তা যদি বাঙালিরা সঠিকভাবে অনুসরণ করে এগিয়ে যেতে থাকে , তবে একদিন বাংলাদেশ অবশ্যই বঙ্গবন্ধুর ‘ সোনার বাংলা ' হিসেবে গড়ে উঠবে । 

মৃত্যুঃ ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্যদের হাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন । 

উপসংহার : বাংলাদেশের স্বাধীনতার ইতিহাসে একটি অনন্য নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । তিনি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি ও বাংলাদেশের জাতির পিতা । তার দূরদর্শী ও সঠিক নেতৃত্বেই বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল । 

টাগঃরচনা বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু (বিশ্বনেতা বঙ্গবন্ধু রচনা),আমাদের বঙ্গবন্ধু, রচনা বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ -জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু রচনা 



Any business enquiry contact us

Email:-Educationblog24.com@gmail.com

(সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)