শেখ রাসেল রচনা (১০০০,৫০০,৬০০০,১০০,২০০,৩০০ শব্দ) | শেখ রাসেল সম্পর্কে রচনা ( PDF)-sheikh rasel paragraph bangla


Any business enquiry contact us

Email:- Educationblog24.com@gmail.com


 

শেখ রাসেল রচনা | শেখ রাসেল সম্পর্কে রচনা ( PDF)

                    

শেখ রাসেল রচনা 

শেখ রাসেল সম্পর্কে রচনা

ভূমিকা 

বাঙালি জাতির অন্দরমহল থেকে যুগে যুগে আবির্ভাব ঘটেছে অসংখ্য মহান ব্যক্তিত্বের । তাদের কাউকে বা আমরা যথাযথ সম্মান দিয়ে চিরকাল মনে রেখেছি , আবার অনেকেই হারিয়ে গেছেন বিস্তৃতির অতল গহবরে । তবে বাঙালি জাতি বর্তমানে যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছে , তার পেছনে কিছু না কিছু অবদান রয়েছে সেই সকল ব্যক্তিদেরই।তারা প্রত্যেকেই হয় তাদের জীবন দিয়ে কিংবা তাদের কর্ম দিয়ে বাঙালি জাতিকে যুগিয়ে গিয়েছেন মাথা তুলে দাঁড়ানোর রসদ । আমাদের দেশে বাঙালি জাতির প্রধান নেতা বললেই যে মানুষটির নাম সর্বপ্রথম মাথায় আসে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান । ১৯৭৫ সেনা অভ্যুত্থানে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুর নির্মম ও করুণ পরিণতির কথা আমরা সকলেই জানি । স্বাধীনতা দিবসে স্মরণ করি তার বীর পুত্র শেখ কামাল এবং শেখ জামালকে । তবে প্রায়শই যাকে আমরা ভুলে যাই তিনি হলেন ওই একই পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য , বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেল । মাত্র ১১ বছর বয়সে নির্মম মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া রাসেল হয়তো তার কর্মের দ্বারা বাঙালি জাতির ইতিহাস ও উত্থানে দাগ কেটে রেখে যেতে পারেনি , তবে তার কয়েক বৎসরের জীবন বাঙালি জাতির ইতিহাসকে এতই প্রভাবিত করেছে যে কখন তিনি বঙ্গবন্ধু সর্বকনিষ্ঠ পুত্রের সিংহাসন থেকে নেমে এসে আমাদের বন্ধু হয়ে উঠেছেন , তা আমরা বুঝতেই পারিনি ।

শেখ রাসেলের জন্ম 

শেখ রাসেলের জন্মের ইতিহাস বড়ই সুন্দর । ১৯৬৪ সালের অক্টোবর মাসের ১৮ তারিখ । দেশ তখন ভরা হেমন্তের গন্ধে আকুল হয়ে আছে । গ্রাম্য সভ্যতা ভিত্তিক আমাদের দেশের ঘরে ঘরে তখন নতুন ফসল তোলার আনন্দ । এমনই আনন্দের দিনে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের বাসায় জন্ম গ্রহণ করলেন শেখ রাসেল । তার জন্ম হয়েছিল বড় আপা শেখ হাসিনার ঘরে । সমগ্র বাড়ি জুড়ে সেদিন আনন্দের জোয়ার । জন্মের কিছুক্ষন পর শেখ হাসিনা এসে ওড়না দিয়ে তার ভেজা মাথা পরিষ্কার করে দেন । জন্মের সময় শেখ রাসেল চেহারায় ছিলেন স্বাস্থ্যবান । এ যেন শুধু বঙ্গবন্ধুর পরিবারেরই আনন্দ নয় , সমগ্র জাতির আনন্দ ।

নামকরণ 

শেখ রাসেলের নামকরণের পেছনেও এক সুন্দর কাহিনী রয়েছে । বঙ্গবন্ধু বরাবরই ছিলেন বিশ্বশান্তি ও সহাবস্থানের এবং যুদ্ধের ঘোর বিরোধী এই সূত্র তিনি বিখ্যাত নোবেল বিজয়ী দার্শনিক বার্ট্রান্ড রাসেলের একজন গুণমুগ্ধ ভক্ত ছিলেন । প্রসঙ্গত উল্লেখ করতে হয় বার্ট্রান্ড রাসেল নোবেলবিজয়ী দার্শনিক কিংবা সমাজবিজ্ঞানীই ছিলেন না , ছিলেন আন্তর্জাতিক যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের একজন বড় মাপের নেতাও । দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী সময়ে সমগ্র পৃথিবী যখন সম্ভাব্য একটি পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কায় সন্ত্রস্ত হয়ে আছে , তখন যুদ্ধ বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম মুখ হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন বার্ট্রান্ড রাসেল । এমনই মহান ব্যক্তির ব্যক্তিত্বে অনুপ্রাণিত হয়ে বঙ্গবন্ধু তার কনিষ্ঠ পুত্রের নাম রাখেন শেখ রাসেল ।

ছেলেবেলা 

শেখ রাসেলের ছেলেবেলা দেশের সমকালীন রাজনৈতিক পরিস্থিতির মতোই বর্ণময় । জন্মের পর খুব বেশি দিন তিনি বাবার সান্নিধ্য পাননি । দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে কিছুদিনের মধ্যেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয় । প্রথমে ঢাকায় থাকলেও পরে পাকিস্থানে তাকে স্থানান্তরিত করা হয় । শোনা যায় বড় আপা শেখ হাসিনার সঙ্গে কারাগারে বঙ্গবন্ধুকে দেখতে গিয়ে মাত্র দু বছর বয়সের রাসেল তার আপাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন , সে বঙ্গবন্ধুকে বাবা বলে ডাকতে পারে কিনা । সামান্য কিছুদিনের জীবনের বেশিরভাগ সময়টাই রাসেল কাটিয়েছিলেন তার মা এবং বোনদের কাছে । তার পড়াশোনা শুরু হয়েছিল ইউনিভার্সিটি ল্যাবরেটরি স্কুল ও কলেজে । ১১ বছর বয়সে যখন তার মৃত্যু হয় তখন তিনি সেখানকারই চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন ।

নির্মম হত্যাকাণ্ড 

১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট এর সেই অভিশপ্ত রাতের সঙ্গে পরিচিতি আমাদের সকলেরই রয়েছে । সেই রাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর নির্মম পরিণতির কথা আমরা সকলেই কম বেশি জানি । একদল তরুণ সেনা কর্মকর্তা সেই দিন রাতে শেখ মুজিবের ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাসভবন ট্যাংক দিয়ে গিলে ফেলেন । সেইদিন প্রত্যুষে বঙ্গবন্ধু , এবং ব্যক্তিগত কর্মচারীদের সাথে শেখ রাসেলকেও হত্যা করা হয় । শেখ মুজিবের ব্যক্তিগত কর্মচারী মহিতুল ইসলামের কথা অনুযায়ী , রাসেল দৌড়ে এসে তাকে জড়িয়ে ধরেন , জানতে চান সেনারা তাকেও মারবে কিনা । এমতাবস্থায় একজন সেনা কর্মকর্তা মহিতুলকে এসে মারলে রাসেল তাকে ছেড়ে দেয় । সে কাঁদতে থাকে থাকে মায়ের কাছে নিয়ে যাওয়ার জন্য । সেই সময় একজন ঘাতক রাসেলকে ভেতরের ঘরে নিয়ে গিয়ে ব্রাশ ফায়ারের মাধ্যমে হত্যা করে ।

উপসংহার 

 শেখ রাসেল বাঙালি জাতির কাছে এক যুগোত্তীর্ণ ব্যক্তিত্ব । বাঙালি জাতি তার মধ্যে খুঁজে পায় রূপকথার মতো নিজেদের ছেলেবেলাকে । শেখ রাসেলের মধ্য দিয়ে বেঁচে থাকে আপামর বাঙালির শৈশব । অন্যদিকে তার নির্মম মৃত্যুর কাহিনী বারবার মনে করিয়ে দেয় আমাদের দেশের করুন ইতিহাসের কথা । সেই সমস্ত নৃশংস ক্ষমতালোভী মানুষের কথা যারা কেবলমাত্র ক্ষমতার লোভে ১১ বছরের একটি ছোট্ট শিশুকে অবধি রেহাই দেয়নি । যে জাতি নিজের ইতিহাস থেকে বিস্তৃত হয় , তারা সভ্যতার ইতিহাসে স্থবির হয়ে পড়ে । শেখ রাসেল বাঙালি জাতির সেই ইতিহাসের এক জ্বলন্ত প্রতিমূর্তি । তার স্মৃতিকে চিরদিন বাঁচিয়ে রাখার উদ্দেশ্যেই বাংলাদেশে গঠন করা হয়েছে শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্র , শেখ রাসেল জাতীয় শিশু কিশোর পরিষদ । শেখ রাসেলের নামে রাজধানী ঢাকার বুকে নামাঙ্কিত হয়েছে একটি স্কেটিং স্টেডিয়াম । এভাবেই চিরকাল শেখ রাসেল অমর হয়ে থাকবেন বাঙালি জাতির স্মৃতিতে । বাঙালি জাতি শেখ রাসেলের স্মৃতি বুকে নিয়ে তাকে বন্ধুর স্নেহের আসনে বসিয়ে সভ্যতার পথে আরো অগ্রসর হোক , এই কামনা করি ।

Tag:শেখ রাসেল রচনা, শেখ রাসেল সম্পর্কে রচনা ( PDF),Sheikh Rasel, sheikh rasel paragraph bangla 


Any business enquiry contact us

Email:-Educationblog24.com@gmail.com

(সবচেয়ে আগে সকল তথ্য,গুরুত্বপূর্ণ সকল পিডিএফ, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদেরGoogle News,FacebookএবংTelegram পেজ)


                               

 

কিভাবে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে পিডিএফ ডাউনলোড করবেন এবং পাসওয়ার্ড কি দিবেন? বিস্তারিত জেনে নিন



Previous Post Next Post